উড়োচিঠি

প্রাপক,

আকাশনীলা,

ঠিকানাহীন।
এই শহরে আমার কোন বন্ধু ছিল না, ছিল ছিপ নৌকার মত এক বিষণ্ণ কিশোরী, যে আমাকে মাঝেমাঝে ভালোবাসার চিঠি লিখত। তবে আমি তার ভালোবাসাকে কখনো স্পর্শ করিনি। পালকে শোকের চিহ্ন নিয়ে আজ আমি পলাতক, তুমি জানলে না!!!
আর জানবেই বা কি করে? হয়তবা তুমি ছিলেনা বলে,,,
প্রায় প্রতিটা রাত কেটেছে নির্ঘুম । চোখের পাতাগুলো যখন ক্লান্তি আর অবসাদে যখন একটা অপরটার উপর লুটিয়ে পড়ত, তখন নিদ্রা দেবীর কোলে নিজেকে এলিয়ে দিতাম। মেয়ে, তুমি জান কি, আমার ঘুমন্ত প্রহরগুলো ছিল স্বপ্নহীন, ফ্যাকাসে জীর্ণ কুটিরের মতঅবসর বেলা গুলো কিছু অর্থহীন বেস্ততায় কাটানো ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই। অনেকের ভিড়ে একা থাকার একরাশ নিদারুণ হতাশা নিয়ে কেটে যাচ্ছিল জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত, মলিন হচ্ছিল রঙ্গিন বসন্ত। আবেগময় বর্ষার বারিধারাকে খোঁড়া রাস্তার কাদার যোগানদার ছাড়া পারতাম না আর কিছুই ভাবতে । আমি নিজের রাজ্যে ছিলাম বড় অসহায়।
তারপর, একদিন , বিবসনে মনে - কুহেলী সরিয়ে বসে, পাপ দেখা ভোরে তুমি এলে তাইক্ষণিকের তরে, আমার একাকি রাজ্যে সুখস্বপ্নেরা মেরেছিল হানা। জীবনটা তার মানে খুঁজে পেয়েছিল। সুখের আবেশ ছড়িয়ে ছিল মনের রাজ্যের প্রতিটি কোনায়। ভালোবাসাকে ভালোবাসিয়ে ছিলে, যদিও অনেকটা জোরপূর্বক ছিল। তারপরেই তো মনে হয় হারিয়ে গেলে, ঘুণপোকা খাওয়া কোন এক অবেলায়।
আর আজ, তুমি নেই বলে,,
ঠিকানাবিহীন পথে, আমার পথচলা
জানিনা শেষ কোথায়,,,,,


কথাগুলো তোমাকে কেন বলছি জানা নেই, না আছে তোমাকে হারাবার কষ্টহয়তবা তুমি কখনই আমার ছিলে না বলেই কষ্ট নেই। কখনই তো তোমাকে চাইনি, আমার একার রাজ্যে একাকী বেশ তো ছিলাম। কেন তুমি এলে? আর যখন একা করে চলে গেলে, এখন কেন আমি ভালো নেই, জান কি? থাক, আর কষ্ট নিয়ে জানতে হবেনা, কারন কোন উত্তর তুমি দিতে পারবে না। আর যেদিন পারবে সেদিন উত্তর শোনার জন্যে হয়ত আমিই থাকব না।
সুখে থেক, অনেক সুখে, যতটা কষ্টে বেঁচে আছি, তারচেয়েও অনেক বেশী সুখে। যার বেশী কেউ থাকেনি কখনো।
প্রেরক,
সেই অচেনা নিশাচরের দেবতা,,,,,

No comments:

Post a Comment