ভূতত্ত্ব ও নগরায়ন


সুচনাঃ বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর ঘনবসতি পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের প্রায় ২৮ (আঠাশ) ভাগ মানুষ বাস করে শহরে আর বাকি ৭২ (বাহাত্তর) ভাগ মানুষের আবাস গ্রামে। গ্রামীন উপনিবেশের পাশাপাশি বিভিন্ন শহরাঞ্চলেও অপরিকল্পিত ছড়ানো ছিটানো এলোমেলো ভাবে বসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে ঘরবাড়ির সংখ্যা তেমনি অন্যদিকে কমছে কৃষিজমি। দেশের সার্বিক উন্নয়নে, কৃষি জমির উপর চাপ কমাতে স্বল্প জায়গায় অধিক মানুষের বাসস্থানের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন সঠিক ও সুচিন্তিত নগরায়ন।
এদেশের বিচিত্র আর্থসামাজিক অবস্থা, প্রতিকুল ভৌগলিক অবস্থান ও ভূ-তাত্ত্বিক গঠন নগরায়নে বাধা সৃষ্টি করে। নদী মাতৃক এ দেশে প্রচুর উপনদী ও শাখানদী বহমান যার ফলে নগর উন্নয়নের পাশাপশি সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং উচ্চ ও নিম্ন ভূমি নিয়ন্ত্রণকারী ভূ-গাঠনিক প্রক্রিয়াসমূহ মনুষ্য উপনিবেশ এবং নগরায়নে প্রভাব ফেলে। ভূমিরূপের দিক থেকে বাংলাদেশের অধিকাংশই নিম্ন ভূমি। যার ফলে প্রতিবছর স্বাভাবিক বর্ষায়ও এর এক-চতুর্থাংশ ভুমি পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এদেশের বেশিরভাগ জায়গা প্রতিবছর বন্যা ও খড়ায় আক্রান্ত হয়। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোতে সাধারণত মাটি ভারাট করে উচু ঢিপি তৈরী করে তার উপর ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা হয়। সমূদ্র তীরবর্তি এলাকাগুলো নিম্নাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এসব এলাকায় বাঁধ তৈরী করে এলাকাগুলোকে সামূদ্রিক ঢেউ বা সামূদ্রিক ঝড় থেকে রক্ষা করা হয়। কখনও কখনও সাইক্লোন বা সামূদ্রিক ঝড়ের কারণে এ বাঁধ গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে এসব এলাকার নগরায়ন অবোকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চট্রোগাম ও চট্রোগ্রাম পর্বতমালা এবং সিলেটের কিছু অংশ ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় পুরো অংশই অদৃঢ় নদীজ এবং সামূদ্রিক পলল দ্বারা আবৃত। ফলে গুনগতমানের নির্মাণ উপাদান যেমন বড় দানাদার বালু এবং গ্রাভেল স্বল্পপরিমানে পাওয়া যায়। শুধুমাত্র কাদামাটি যা ইট তৈরীতে ব্যবহৃত হয় তা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
এযাবতকালে প্রশাশনিক কেন্দ্রসমূহ যেমন উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় এলাকাগুলো নগর ও শহরে পরিনত হয়েছে। এই এলাকাগুলো বড় রাস্তা এবং রেল লাইন দ্বারা সংযুক্ত হয়েছে। এসব রাস্তা ও রেল লাইনের পার্শ্ববর্তি এলাকাগুলো সহজেই বিদ্যুৎ, টেলিফোন ও গ্যাসের সুবিধা প্রাদান করা হয়েছে। ভূ-বিজ্ঞানের দিকগুলি বিবেচনা করে রাস্তা ও রেল লাইন এবং নদীর বা বাঁধের পাশদিয়ে নগরায়নের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে।
পরিচিতিঃ বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ যার আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। এদেশের জনসংখ্যা প্রায় ষোল (১৬) কোটি ( প্রায় ১৬০ মিলিয়ন)। এদেশের অর্থনীতি এখন অবধি কৃষিনির্ভর। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ খৃঃ তে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১.২২ শতাংশ এবং শতকরা প্রায় বাহাত্তর (৭২) ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে এবং বাকি অংশ বাস করে শহরে। দিনে দিনে মানুষ বাড়ছে। বাড়ছে মানুষের আবাস স্থল সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় চাহিদা। ফলশ্রুতিতে কৃষি জমির উপর গড়ে উঠছে ঘরবাড়ি কলকারখানা ইত্যাদি। কমে যাচ্ছে কৃষিজমি। এদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণে নিয়মানুগ নগরায়ন ও যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন ব্যহত হয়। বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থা ও এর সাথে সম্পৃক্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগসমূহ স্বল্প জায়গায় টেকসই ও দ্রুত নগরায়নে বাধা সৃষ্টি করে। ভৌগলিক অবস্থান, ভূ-তাত্ত্বিক গঠন ও বিচিত্র আর্থসামাজিক অবস্থার কারনে দ্রুত নগরায়নে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
ভৌগলিক অবস্থানঃ গনপ্রাতন্ত্রী বাংলাদেশ উত্তর অক্ষাংশ ২৩˚৩৫′ থেকে ২৬˚৭৫′ এবং পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ ৮৮˚০৩′ থেকে ৯২˚৭৫′ পর্যন্ত বিস্তৃত। ভারত মহাসাগরের অন্তর্গত বঙ্গোপসাগরের টুপি হিসেবে বাংলাদেশ অবস্থান করছে যার প্রভাব এদেশের মাটি ও মানুষের উপর পরিলক্ষিত হয়।
ভূ-অবোকাঠামো ও ভূমি রূপঃ ভূমিরূপ ও বৈশিষ্টের উপর ভিত্তিকরে বাংলাদেশকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা- তিস্তা ফ্যান, মধুপুর ও বরেন্দ্র ভূমি, ব্রহ্মপূত্র প্লাবনভূমি, আত্রাই প্লাবনভূমি, সিলেট ডিপ্রেশন (ট্রাফ), সিলেট পর্বতমালা ও চট্রোগ্রামের চট্রোগাম পর্বতমালা। এসব পর্বতের উচ্চতা সমূদ্র পৃষ্ঠ হতে ২০ মিটার থেকে শুরু এবং সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওকাড়াডাং-এর উচ্চতা সমূদ্র পৃষ্ঠ হতে ৮৮৩.৯২ মিটার। মধুপুর ও বরেন্দ্র ভূমির উচ্চতা সমূদ্র পৃষ্ঠ হতে ৬ থেকে ৮৫ মিটার। সমূদ্র তীরবর্তি এলাকা, ডেল্টা এলাকা এবং ডিপ্রেশনের উচ্চতা সমূদ্র পৃষ্ঠ হতে ০ থেকে ৩ মিটার। নগরায়নের উপর ভূমির অবকাঠামো বা ভূমিরূপ এবং এর উচ্চতার যথেষ্ট প্রভাব থাকে। বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চল সমূহে সমূদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রতিকুল প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া নদীজ ক্ষয় (রিভার ইরোশন) এদেশের নগরায়নে দারুন সমস্যার সৃষ্টি করে।
জলবায়ু ও পানিতত্ত্ব (হাইড্রোলজী)ঃ আমাদের এই বাংলাদেশে গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু বিদ্যমান যেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এদেশে বৃষ্টিপাতের পরিমান ১৫৩০ মিলিমিটার থেকে ৫১০ মিলিমিটার। এখানে প্রায়শ্চই ধ্বংসাত্বক সাইক্লোনিক ঝড় হয়। গত ১৭৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০০ টিরও বেশি প্রলয়ংকারী ঝড় এদেশকে আক্রমন করেছে। এসব প্রাকৃতিক দূর্যোগও নগরায়নে বিশেষ সমস্যা সাধন করে। নদী মাত্রিক এদেশে প্রায় ৩১০ টি উল্লেখযোগ্য নদী রয়েছে যা গড়ে তুলেছে গঙ্গা, ব্রহ্মপূত্র ও মেঘনা নদীর বৃহৎ নদীব্যবস্থা (রিভার সিস্টেম)। এসকল নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,১৫৫.০০ কিলোমিটার। মোট ক্যাচমেন্ট এলাকা (বৃষ্টিপাতের দরূণ যে অঞ্চল হতে নদীতে জল সরবরাহ হয়) প্রায় ১.৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। এইসমস্ত নদীতে বাৎসরিক পানির প্রবাহ প্রায় ১,১০০.০০ মিলিয়ন একর ফুট পানি এবং প্রতি বছর প্রায় ২.৪ বিলিয়ন টন পলল বহন করে। প্রতি বছর প্রায় ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার নিম্ন ভূমি এলাকা প্লাবিত হয়। প্রতি বছর বন্যার কারনে প্লাবনভূমি এলাকায় নগর অবকাঠামের ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভূ-গঠনাত্মক (জিও-টেকটনিক) সেটআপ ও ভূ-তাত্ত্বিক গঠনঃ ভূ-গঠনাত্মক ঘটনার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে আটটি অঞ্চলে ভাগ করা হয় যথা- ১) হিমালয়ান ফরডিপ ২) রংপুর প্লাটফর্ম ৩) বগুড়া শেল্ফ ৪) হিঞ্জজোন ৫) ফরিদপুর-সিলেট ট্রাফ ৬) বরিশাল গ্রাভিটি হাই ৭) হাতিয়া ট্রাফ এবং ৮) ত্রিপুরা- চট্রোগ্রাম ফোল্ড বেল্ট। কোন অঞ্চলের ভূ-গঠনাত্মক (জিও-টেকটনিক) সেটআপ উক্ত অঞ্চলের ভূমিবৃত্তি ও উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে। টেকটনিক জোনের বৈশিষ্টের কারনে কিছুকিছু এলাকা নগরায়নের জন্য উপযোগী হয় আর কিছুকিছু এলাকা হয়না। ভূ-তাত্ত্বিক কাঠামো যেমন- উপ-পৃষ্ঠ ধনুকাকার গঠন (সাবসারফেস এন্টিক্লাইন), প্রস্তরময় ভিত্তিভূমি (সিনক্লাইন), চ্যুতি (ফল্ট) ইত্যাদি নগরায়ন প্রক্রিয়ার উপর বিস্তর প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশে প্রচুর ছোট-বড় চ্যুতি বিদ্যমান। ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের কারণে পদ্মা-গঙ্গা নদীর উত্তর-পূর্ব এলাকাগুলি ভূমিকম্প প্রবণ। অতীতে অনেক ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার নগর-বন্দর ধ্বংসলীলায় পরিণত হয়েছে। সুতরাং ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার নগরায়নকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিত।
ভূ-তত্ত্বঃ সিলেট পর্বতমালা ও ত্রিপুরা- চট্রোগ্রাম ফোল্ড বেল্ট এলাকা সমূহ বালু (স্যান্ডস্টোন), পলিশিলা (সিল্টস্টোন), কর্দমশিলা (শেল) এবং কাদা (ক্লে) ইত্যাদি নবজীবীয় শিলা দ্বারা গঠিত। শীলাসমূহের বৈশিষ্টের কারণে এখানে খাড়া ঢাল বিদ্যমান। তাই মাটি লতানো (সয়েল ক্রীপিং) ও ভূমিধ্বসের মত ঘটনা এখানে নিয়মিত ঘটে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় ৮৫% ভাগ এলাকা মধুপুর ও বরেন্দ্র ভূমির কাদা (মধুপুর এন্ড বারিন্ড ক্লে রেসিডিয়াম), পলিজ অবক্ষেপন বা পলিজ তলানি (এলুভিয়ার ডিপোজিট), বদ্বীপিয় অবক্ষেপন (ডেল্টিক ডিপোজিট), বিলজাত অবক্ষেপন (পেলুডিয়াল ডিপোজিট) এবং উপকূলবর্তী অবক্ষেপন (কোস্টাল ডিপোজিট) দ্বারা আবৃত যা বালু (স্যান্ড), পলিশিলা (সিল্ট) এবং কাদা (ক্লে) দ্বারা গাঠিত। অবক্ষেপনের বৈশিষ্টের উপর ভিত্তি করে কিছুকিছু শিলাস্তরের একক নগরায়নের জন্য ভাল। এদেশে কাদামাটির অবক্ষেপন অনেক পরিমানে দেখা যায় যা ইট তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। আবার মধ্যম দানাদার বালু (মিডিয়াম গ্রেইন্ড স্যান্ড) কন্সট্রাকশনে ব্যবহৃত হয়।
নগরায়নের ইতিহাস, আর্থসামাজিক আবস্থা এবং ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রায়নঃ বাংলাদেশে ঠিক কখন থেকে নগরায়নের সূত্রপাত ঘটে তা ভালভাবে জানা যায়না। পি-টলেমির প্রাচীন বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে জানা যায় যে, এদেশে প্রাচিন কালেও নগর এলাকা ছিল। কুমিল্লা জেলার ময়নামতির ধ্বংসাবশেষ, বগুড়ার মহাস্তনগড় এবং জয়পুরহাটের পাহাড়পুর প্রাচীন বাংলার নগর উপনিবেশ ও বৃহৎ পুরকৌশল কাজের নিদর্শন বহন করে। মোঘল, পাঠান ও ব্রিটিশ আমলে এখানে নগর উপনিবেশ ছিল। যেহেতু এখানকার অর্থনীতি ছিল কৃষিনির্ভর তাই অতীতে এখানে বৃহৎ মাত্রায় নগরায়ন গড়ে উঠেনি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রশাসনিক কেন্দ্র যেমন-ইউনিয়ন, উপজেলা (থানা), জেলা, বিভাগীয় কেন্দ্রস্থান সমুহ এবং রাজধানী গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি নগরায়ন উন্নয়ন ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪৯০ টি থানা, ৪৪৮৬ টি ইউনিয়ন রয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে কৃষি ভিত্তিক রাজনীতি বিরাজমান, তাই বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজমির কাছাকাছি বসবাস করে। এবং পল্লী অঞ্চলে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত উপনিবেশ।
বাংলাদেশে নগরায়নের কিছু প্রস্তাবনাঃ
বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থা ও এর সাথে সম্পৃক্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগসমূহ স্বল্প জায়গায় টেকসই ও দ্রুত নগরায়নে বাধা সৃষ্টি করে। ভৌগলিক অবস্থান, ভূ-তাত্ত্বিক গঠন ও বিচিত্র আর্থসামাজিক অবস্থার কারনে দ্রুত নগরায়নে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত জানযট সমস্যা জনজীবনকে করে তুলেছে দুঃর্বিসহ। রৈখিক নগরায়ন বা বৃত্তাকার কয়েল বা মাকড়শার জাল আকৃতির নগরায়ন হতে পারে এসব সমস্যা মুক্ত নগরায়ন।
রৈখিক নগরায়নঃ
প্রাচীন কাল থেকেই এর প্রচলন দেখা যায়, তখন নগর গড়ে উঠতো নদীর পাশে। যেহেতু সে সময়ে নৌকা ছিল অন্যতম বাহন তাই নদীর তীর ঘেঁসে গড়ে উঠেছিল রৈখিক নগরায়ন। সময় বদলেছে, বেড়েছে স্থল পথের ব্যবাহার। এই রাস্তার পাশদিয়ে গড়ে উঠতে পারে রৈখিক নগরায়ন। ঢাকার বাহিরের নদীতীর ধরে যদি হাইওয়ে নির্মিত হয় তবে তার পাশদিয়েও গড়ে উঠতে পারে নগরায়ন।
বৃত্তাকার কয়েল বা মাকড়শার জাল আকৃতির নগরায়নঃ
ব্যস্ততম নগর ঢাকার জন্য এই পদ্ধতি হতে পারে যুগোপযোগী। নগরায়ন হবে বৃত্তাকার কয়েল আকৃতির। এবং রাস্তাসমূহ হবে কয়েল আকৃতির। যেখানে কোন চৌরাস্তা বা পাঁচরাস্তার মোড় থাকবে না। কোন এক কেন্দ্র বিন্দু থেকে নগর শুরু হবে বিস্তৃত হবে কয়েল আকৃতিতে। কেন্দ্র বিন্দুটি এমন থাকবে যে সেখানে থাকবে কিছুটা ফাঁকা জায়গা যেটা হতে পারে একটি স্টেডিয়াম। আর সবচেয়ে দুরবর্তি স্থান থেকে কেন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত চার/ পাঁচটি রেডিয়্যাল ফ্লাইওভার যা বার্ডস আই ভিউতে দেখাবে মাকড়শার জালের মত।
নগরায়ন একটি জটিল পদ্ধতি। নগরায়নের ফলে উক্ত এলাকার ভূমিরূপ, নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং সেখানকার জনমানুষের জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে। প্রচুর অর্থ, সম্পদ ও মানুষ একটি নগরায়নের সাথে জড়িত। সুতরাং টেকসই নগর উন্নয়ণের লক্ষ্যে বহুমূখী অভিগমন ও সুচিন্তিত যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

No comments:

Post a Comment