পাঞ্জা

বুড়ো মানুষ দেখলেই কিছু কিছু বিচ্ছু ছেলে আছে, জ্বালাতন শুরু করে। নানা রকম পদ্ধতি তে।
আমার এক পরিচিত বৃদ্ধ মানুষ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, কিছু ছেলে হাজির হল।
'ও দাদু ,কোথায় যাচ্ছেন? 'তারা জিজ্ঞেস করল।
দাদু উত্তর দিলেন না। আবার তারা জিজ্ঞেস করল। এবারও তিনি নিরুত্তর।
তাদের মধ্যে একজন বললে, 'দাদু বোধহয় সামনে মেয়ে দেখে আমাদের ভুলে গেছে।'
রাস্তা দিয়ে সত্যিই তখন কয়েকটি মেয়ে যাচ্ছিল।
দাদু এবার মুখ খুললেন, 'বাবা রা সব ,আমায় জ্বালাতন করবেনা।'
একটি ছেলে নিরীহ মুখ করে বলল, 'কোথায় জ্বালাতন করলাম। আমরা তো কেবল জিজ্ঞেস করছি কোথায় যাচ্ছেন?'
আরেকজন বলল, 'আঃ ছেড়ে দে না, দাদুর দেরি হয়ে যাচ্ছে। মেয়ে গুলো এগিয়ে গেছে।'
দাদু ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললেন, 'আমায় ঘাঁটিয়োনা ,আমি তোমাদের মতই চ্যাংড়া আছি।'
ওরা হেসে উঠল।
দাদু সেই মুহূর্তে একটা ঢিল কুড়িয়ে নিলেন। তারপর সামনে থাকা মেয়েদের দলের মাঝে ঢিল টা ছুড়ে মারলেন।
মেয়ে গুলো ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ল।
'কে মারল ঢিল?'তারা দেখতে পেল তিন ছেলে ও একজন বৃদ্ধ লোক পেছন পেছন আসছে।
সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গুলোর কাছে চলে গেল, 'এই তোমরা ঢিল ছুড়লে কেন?'
ছেলে গুলো হতভম্ব,তারা বুঝতে পারলনা কিছু। মেয়ে গুলোর হম্বি তম্বিতে লোকজন হাজির হয়ে গেল। ছেলেগুলোকে তখন, 'তোদের সাহসতো কম নয়, একে বারে মেরে হাসপাতাল পাঠিয়ে দেব। মেয়েদের সাথে বদমাসি?'
ছেলেগুলো প্রাণপনে বোঝাবার চেষ্টা করল,'আমরা ঢিল ছুড়িনি। আমরা কেন ছুড়তে যাব?
'তারপর দাদু কে দেখিয়ে বলল, 'ইনি করেছেন।'
দাদুর নাম নিতে লোকজন আরও খেপে গেল, 'কি বলছিস,এই বৃদ্ধ মানুষ করবেন? তোদের সাহস তো কম নয়...মিথ্যে অপবাদ দিতে তোর মুখে বাধছে না।'
ছেলেগুলোর কথা কেউ বিশ্বাস করল না। ওদের ভাগ্য ভাল, স্রেফ শাসানি দিয়ে রেহায় দেওয়া হল।
লোকজন চলে যাওয়ার পরে থমথমে মুখ হওয়া ছেলেদের বললেন, 'কিরে আর আমার সাথে পাঞ্জা লড়তে আসবি?'
ছেলেগুলোর মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না,ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে.....

No comments:

Post a Comment